Information

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩: ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, কিভাবে পাসপোর্ট ফি জমা দিবেন এবং ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করবেন সকল তথ্য। অনলাইনে ডিজিটাল পাসপোর্ট বা ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩ নিয়ে আজ আমরা আলোচনা করব। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ই পাসপোর্ট চালু করেছে। ইতোমধ্যে প্রায় সকল জেলাতেই দেয়া হচ্ছে।

অনলাইনে ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ও খরচ ২০২৩

আপনি নিজেই দালাল ছাড়া পাসপোর্ট করার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবেন যদি আপনার একটি ফোন বা কম্পিউটার থাকে। এখানে আমি অনলাইনে ই পাসপোর্ট ফরম (Bangladesh Passport Online Form) পূরন কিভাবে করবেন ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য আপনাদের জানাব। আশা করি আপনার সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন এখানে।

ই পাসপোর্ট করতে কত টাকা লাগবে?

পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা, মেয়াদ ও ডেলিভারীর ধরণ অনুসারে ফি’র পরিমাণ ভিন্ন হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরণের পাসপোর্টের ফি’র পরিমান দেখুন:-

ডেলিভারী 48 Pages 48 Pages 64 Pages 64 Pages
5 Years 10 Years 5 Years 10 Years
রেগুলার ৪,০২৫ টাকা ৫,৭৫০ টাকা ৬,৩২৫ টাকা ৮,০৫০ টাকা
এক্সপ্রেস ৬,৩২৫ টাকা ৮,০৫০ টাকা ৮,৬২৫ টাকা ১০,৩৫০ টাকা
সুপার এক্সপ্রেস ৮,৬২৫ টাকা ১০,৩৫০ টাকা ১২,০৭৫ টাকা ১৩,৮০০ টাকা

বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ

  • উপরোক্ত সকল ফি’র মধ্যে ১৫% ভ্যাট অর্ন্তভূক্ত আছে
  • সরকারি চাকরিজীবিদের যাদের NOC আছে বা অবসর সনদ আছে, তারা রেগুলার ফি দিয়ে জরুরী সুবিধা পাবেন। সরকারী চাকরীজীবিদের জন্য জরুরী আবেদন প্রযোজ্য নয়।

ই পাসপোর্ট করতে কি কি লাগে?

ই পাসপোর্ট আবেদনের জন্য খুব বেশি কাগজপত্রের দরকার হয় না এবং সত্যায়িত করানোর ও প্রয়োজন হয় না। ই পাসপোর্ট করার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যা লাগে তা হলো:-

  1. অনলাইনে আবেদনের সারসংক্ষেপ বা সামারী – Application Summery
  2. আবেদনের কপি
  3. জাতীয় পরিচয়পত্র/ অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ
  4. ঠিকানার প্রমাণপত্র/ ইউটিলিটি বিলের কপি (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  5. পূর্ববর্তী পাসপোর্টের ফটোকপি ও অরিজিনাল পাসপোর্ট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)
  6. পিতা মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি (শিশুদের ক্ষেত্রে আবশ্যিক)
  7. পেশাগত সনদের ফটোকপি বা চাকুরীর আইডি কার্ড (পেশাজীবির ক্ষেত্রে- যেমন ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, হিসাবরক্ষক, আইনজীবি)
  8. নাগরিক সনদ/ চেয়ারম্যান সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে)

ই পাসপোর্ট করার নিয়ম ২০২৩

ই পাসপোর্ট করার জন্য ভিজিট করুন www.epassport.gov.bd এবং আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুসারে অনলাইনে আবেদন করুন। আবেদনে ব্যক্তিগত তথ্য, ঠিকানা ও পিতা-মাতার তথ্য সঠিকভাবে লিখুন। আবেদনের ক্ষেত্রে কোন কাগজপত্র সত্যায়ন করার প্রয়োজন হবে না এবং ই-পাসপোর্ট ফরমে কোন ছবি সংযোজন এবং তা সত্যায়নের প্রয়োজন হবে না।

অবশ্যই জাতীয় ‍পরিচয়পত্র(NID) অথবা অনলাইন জন্ম নিবন্ধন (BRC) সনদ অনুযায়ী, নাম, পিতা-মাতার নাম ও অন্যান্য তথ্য পূরণ করতে হবে।

পাসপোর্ট আবেদন ফরম অনলাইনে পূরণের ক্ষেত্রে অবশ্যই নিদের্শনাবলী অনুসরণ করতে হবে। যদি কোন প্রকার ভুল করে থাকেন তার জন্য আপনাকে পরে ভোগান্তি পেতে হবে।

আবেদনের পূর্বে অবশ্যই ই পাসপোর্ট আবেদনের নিয়ম কানুন জেনে নিন। কিভাবে আপনি নিজেই আবেদন করবেন তা ধাপে ধাপে দেখানো হল।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করার নিয়ম

পাসপোর্ট আবেদন ফরম পূরণ করার জন্য প্রথমে ভিজিট করুন- www.epassport.gov.bd । তারপর Apply Online মেন্যুতে ক্লিক করে, আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন করুন। এরপর ইমেইল ভেরিফিকেশন করে, আপনার ব্যক্তিগত তথ্য, পূর্ববর্তী পাসপোর্টের তথ্য, ঠিকানা, পিতা-মাতার তথ্য ও জরুরী যোগাযোগের ঠিকানা পূরণ করুন। সবশেষে পাসপোর্টের ধরণ ডেলিভারীর ধরণ সিলেক্ট করে আবেদন সম্পন্ন করুন ও প্রিন্ট কপি নিন।

পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন ফরম পূরণের আগে প্রথমে আপনার জেনে নিতে হবে আপনার জেলায় ই পাসপোর্ট সেবা প্রদান করছে কিনা। এখানে দেখে নিতে পারবেন আপনার জেলায় ই পাসপোর্ট সুবিধা রয়েছে কিনা। আঞ্চলিক ই পাসপোর্ট অফিসসমূহ।

ধাপ ১: আঞ্চলিক অফিস ও থানা নির্বাচন

ভিজিট করুন E-Passport Online Registration Portal, আপনি নিচের মত একটি পেইজ দেখবেন।

এখান থেকে আপনি ক্লিক করুন Directly to Online Application তারপর নিচের পেইজ আসবে। এখানে আপনার জেলা ও পুলিশ থানার নাম সিলেক্ট করুন।

এবার আপনাকে আপনার ইমেইল ভেরিফিকেশন করতে হবে। এখানে আপনি যে ইমেইল এড্রেসটি লিখবেন সেটির পাসওয়াড যেন আপনার জানা থাকে। কারণ পাসওয়াড না জানলে আপনি সেটি ভেরিফাই করতে পারবেন না।

ইমেইলের পাসওয়াড মনে না থাকলে সেটি পরিবতন করে নিতে পারেন।

আপনার ইমেইল টি লিখুন ও নিচের রোবট ভেরিফিকেশন টিক দিয়ে Continue বাটন ক্লিক করুন।

ধাপ ২: ইমেইল ভেরিফিকেশন

এখন পাসপোর্ট ওয়েবসাইট থেকে আপনার ইমেইলে একটি ভেরিফিকেশন লিংক পাঠাবে। আপনাকে সেই লিংকে ক্লিক করে আপনার ইমেইলটি ভেরিফাই করতে হবে।

ধাপ ৩: ব্যক্তিগত তথ্য পূরণ

ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর, পুনরায় ওয়েবসাইটে লগইন করুন। এবার Apply for a New Passport বাটনে ক্লিক করুন। Passport Type হিসেবে সাধারণ পাসপোর্ট হলে Ordinary এবং সরকারি আদেশে বা NOC এর মাধ্যমে পাসপোর্ট Official সিলেক্ট করুন।

এখানে আপনার সকল ব্যক্তিগত তথ্য ইংরেজিতে সঠিকভাবে পূরণ করুন।

ইমেইল ভেরিফিকেশনের পর, পুনরায় ওয়েবসাইটে লগইন করুন Login

এখানে আপনার নাম, তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্র বা নম্বর দিন এবং Save and Continue তে ক্লিক করুন।

জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধন কোনটি প্রয়োজন?

উল্লেখ্য যে, যদি আপনার বয়স ১৮ বছরের কম হয়ে থাকলে এবং জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে আপনি অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন দিয়ে পাসপোর্টের আবেদন করতে পারবেন।

১৮-২০ বছরের মধ্যে বয়স হলে, আপনি জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) বা জন্ম নিবন্ধন (BRC) উভয়টির যে কোন একটি দিয়ে আবেদন করতে পারবেন।

যদি আপনার বয়স ২০ বছরের বেশি হয়, আপনাকে অবশ্যই জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর দিতে হবে। আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মাট কার্ড না পেলে, জাতীয় পরিচয়পত্র অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে পারেন।

ID Documents: ID Documents ধাপে আপনার আগের পাসপোর্ট আছে কিনা, অন্য কোন দেশের পাসপোর্ট আছে কিনা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধনের তথ্য দিতে হবে।

আপনার পূর্বের কোন পাসপোর্ট থাকলে Yes দিন আর না থাকলে No, I don’t have any previous/ handwritten passport.

Address: আপনার Present Address ও Permanent Address সঠিকভাবে লিখুন। যদি বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হয়, নিচের বক্সে টিক দিন।

Emergency Contact: জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য আপনার পরিবারের বাবা, ভাই বা অন্য কারো নাম, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বর দিন।

Passport Option: এবার আপনার পাসপোর্টের পৃষ্ঠা সংখ্যা ও মেয়াদ Select করুন।

Delivery Option: Passport Delivery সাধারণ না জরুরী তা সিলেক্ট করুন। সাধারণ হলে Ordinary এবং জরুরী হলে Express সিলেক্ট করুন।

সবশেষে আপনার সব তথ্য পূনরায় যাচাই করে আবেদন জমা দিতে  Submit বাটনে ক্লিক করুন।

ই পাসপোর্ট ফি প্রদান ও আবেদন প্রিন্ট

আপনার আবেদন করা হলে প্রিন্ট করার জন্য আপনি ২টি পৃষ্ঠা পাবেন। 1) Application Summery, 2) Online Registration Form. এগুলো আপনি প্রিন্ট করে নিতে পারেন বা পিডিএফ ফাইল হিসেবে আপনার কম্পিউটারে সেইভ করতে পারেন।

Application summery টি ১ পৃষ্ঠা ও Online Registration form টি উভয় পৃষ্ঠায় প্রিন্ট করবেন।

ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন বাতিল করার নিয়ম

অনলাইনে ই পাসপোর্টের আবেদন করা হলে, আপনি নিজে থেকে আবেদন বাতিল করার কোন সুযোগ নেই। আবেদন বাতিলের জন্য আপনি আপনার জেলা আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালকের কাছে লিখিত আবেদন করতে পারেন।

তাছাড়া, আবেদনে কোন প্রকার ভুলের কারণে যদি আবেদন বাতিল করতে চান, তা বাতিল না করলেও পারেন। পাসপোর্ট অফিস থেকে এসব ভুল সংশোধন করে পাসপোর্ট আবেদন এনরোলমেন্টে দিতে পারবে। এজন্য আপনার ভুলের ব্যপারে অফিসে অবগত করুন।

ই পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

এখানে আপনার আবেদনকৃত ই পাসপোর্টের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে পারবেন। এজন্য আপনার আবেদনের Online Registration ID (OID) বা Application ID প্রয়োজন হবে। আপনার ই পাসপোর্ট অনলাইন আবেদন করার পর, Application Summery পেইজ থেকে Online Registration ID বা OID পাবেন। তাছাড়া Registration Form থেকেও Application ID এবং OID জানতে পারবেন।

ই পাসপোর্ট চেক করতে যা লাগবে

ই পাসপোর্ট চেকিং করার জন্য আপনার ইন্টারনেট সংযোগ সহ একটি স্মার্টফোন বা কম্পিউটার লাগবে। এছাড়া আপনার প্রয়োজন হবে,

  • Online Registration ID (OID) অথবা Application ID
  • পাসপোর্ট আবেদনে দেয়া জন্ম তারিখ

ই পাসপোর্ট চেক

ই পাসপোর্ট চেক করার জন্য আপনার Google Chrome ব্রাউজার থেকে ভিজিট করুন- www.epassport.gov.bd সাইটে। এরপর Check Status মেন্যুতে ক্লিক করে, Online Registration ID অথবা Application ID এবং জন্ম তারিখ দিন। সবশেষে I am human লেখার পাশে টিক দিয়ে Check বাটনে ক্লিক করে পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন।

নিচের অপশন থেকে ই পাসপোর্ট ডেলিভারি স্লিপ চেক করতে পারবেন।

  1. অনলাইনে E Passport Check করার জন্য এই পেইজের নিচের দিকে স্ক্রল করুন।
  2. Online Registration ID লিখুন। এটি OID1000001234 এ ধরণের একটি আইডি যা Application Summery পেইজে পাওয়া যাবে। এছাড়া, Application ID ও ব্যবহার করতে পারেন।
  3. পাসপোর্ট আবেদন অনুযায়ী আপনার জন্ম তারিখ লিখুন।
  4. I am human লেখার বাম পাশে, টিক দিন এবং ক্যাপচা পূরণ করুন।
  5. সবশেষে চেক বাটনে ক্লিক করুন। আপনার পাসপোর্ট স্ট্যাটাস জানতে পারবেন।

পাসপোর্ট চেক করুন

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করার নিয়ম

পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেকিং করার কোন সুযোগ রাখা হয়নি। তবে BMET রেজিস্ট্রেশন করা থাকলে পাসপোর্ট নাম্বার দিয়ে পাসপোর্ট চেক করতে পারবেন।

এমআরপি থেকে ই পাসপোর্টে রিনিউ করার সুবিধা

MRP পাসপোর্ট থেকে ই পাসপোর্টে রিনিউ করার বড় সুবিধা হলো, তথ্য পরিবর্তন। অর্থাৎ আপনার পূর্ববর্তী পাসপোর্টে যদি কোন তথ্যের ভুল থাকে আপনি সহজেই বর্তমান জাতীয় পরিচয়পত্র অনুসারে সঠিক তথ্য ই পাসপোর্টে অর্ন্তভুক্ত করতে পারবেন।

Related Articles

Back to top button
close